চট্টগ্রাম সংবাদাতা: চট্টগ্রাম বিভাগের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বহুদিনের সনামধন্য হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম একটি চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালে এবং বর্তমানে উন্নতমানের ৫১০ শষ্যাবিশিষ্ট আর চিকিৎসা বিভাগ রয়েছে মোট ৩৫ টি । তাছাড়াও প্রতিবছর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হয় ১৭৫ জন।
এসব বলার পেছনে অবশ্যই কোন না কোন যুক্তিকতা রয়েছে বলাবাহুল্য যে এই সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনটি বিভাগ রয়েছে আউটডোর , ইনডোর ও ইমার্জেন্সি এই বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে ডাক্তার থেকে শুরু করে ক্লিনার পর্যন্ত দূর্ণীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে। শুরু থেকে বলা যাক প্রবেশ দ্বার থেকে শুরু দায়িত্বে নিয়োজিত সিকিউরিটি সার্ভিস (পুলিশ ) কোন রোগী প্রবেশ করাতে চাঁদা দিতে হয় নিদির্ষ্ট অংকের ৫০-১০০. আরেকটু এগিয়ে হাসপাতালের দরজায় হুইলচেয়ার কিংবা ট্রলি নিতে হলে দায়িত্বে নিয়োজিত আইয়া ,নার্স কে দিতে হবে প্রতি ট্টলি কিংবা হুইলচেয়ারে বাবত ১০০-২৫০ টাকা রোগীর পক্ষ থেকে।
এবার শুরু হল রোগী ভর্তির জন্য কাউন্টারে গিয়ে এন্ট্রি জন্য সরকার নিধারিত ফি কিন্তু এর বাহিরে গুনতে হবে অতিরিক্ত টাকা শুধু এন্ট্রি পাওয়ার জন্য সেখানে অনুরূপ ১০০-২৫০রোগীর অবস্থা ও স্থান বিশেষ। এবার সিট পেতে গেলে ওয়ার্ড বয় ,নার্স সহ দায়িত্বে নিয়োজিত এদেরকে দিতে হবে আবারও ১০০-২৫০পযর্ন্ত। এবার আসা যাক ডাক্তার কিন্তু সরকারি নিয়মে নিদিষ্ট ফি জমা ছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ সেবার জন্য ২০০-৫০০টাকা দিতে হয় নিদিষ্ট ব্যক্তি কে যে কিনা ডাক্তারের খুব আপন লোক। এর শেষ হয়নি এখনো এবার ডাক্তারের পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা নেয়ার পর সাজেস্ট কৃত ঔষধ কিংবা পরিক্ষা নিরিক্ষা করাতে হবে ডাক্তারের নিদিষ্ট করে দেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেখানে ঐ ডাক্তার পায় প্রতিটি পরিক্ষার জন্য নিদিষ্ট কমিশন পারে পরিক্ষা শেষে রিপোর্ট সংগ্ৰহ করে ঔষধ কেনার পালা সেখানেও যে ডাক্তারের পরামর্শ কিংবা সাজেস্ট নিয়ে ঔষধ খেতে হবে ডাক্তার নিজে নিধারিত করে দেবেন কোন দোকান থেকে ঔষধ কিনবেন উল্লেখ্য যে ঔষধের দোকান নিদিষ্ট করার পেছনে রয়েছে প্রতি রোগী হিসেবে কমিশন পাবে ডাক্তার।
আবারও যাওয়া যাক ভেতরে ভর্তিকৃত রোগীর অবস্থা ও মান লক্ষ্য করে নার্স ওয়ার্ড বয় প্রতি রাতে ১০০-১৮০পর্যন্ত নিয়ে সিট দিয়ে থাকে। যদি টাকা দিতে অসম্মতি করে তাকে সিট থেকে নামিয়ে দিয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে।এবার আসা যাক দিবারাত্রির পরিচর্যার জন্য নার্স ,আইয়া, ক্লিনার কে বিছানা পরিবর্তন , রোগীর ফেলা ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে অবশ্যই নিদিষ্ট টাকা দিয়ে কাজ করাতে হবে ১০০-৩০০পযর্ন্ত। না হলে অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে হয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ক্ষেত্রে। যদি এভাবে চলতে থাকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা সেবা নেয়া সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে রুগী নিয়ে যাওয়ার সাথে সথে প্রথমে কমপক্ষে ৪টি পরিক্ষা সাথে ১বস্তা স্যালাইন ও কিছু ঔষধ। পরিক্ষার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত স্যালাইন আর ঔষধ চলবে।রিপোর্ট আসার পর আরেক ডাক্তার আসবে সে দেখে আবার অন্য পরিক্ষা দিবে।এভাবে প্রতিদিন ডাক্তার পরিবর্তন হবে আর একটার পর একটা পরিক্ষা দিবে।পরিক্ষা করাতে হুইলচেয়ারে নিয়ে গেলে টাকা আর ট্রলিতে নেওয়া লাগলে টাকা ওয়ার্ড বয়কে দিতে হবে। আর প্রতিদিন নতুন নতুন ঔষধ যোগ হবে।প্রতিদিন রোগীর সাথে দেখা করতে আসলে দারোয়ানকে খুশি করতে হবে।সব পরিক্ষা শেষ।
এবার অপারেশন এর পালা। অপারেশন করতে ৬০০০ থেকে ৭০০০ টাকার ঔষধ কিনে ডাক্তারের হাতে দিতে হবে। যাহা অফেরতযোগ্য।অপারেশনে যদি রোগী মারা যায়। টাকা এবং মানুষ সব শেষ। হাতে ভিক্ষার বাটি।আর অপারেশন যদি সাক্সেস হয়।অপারেশন থিয়েটারের বয়কে খুশি করতে হবে।দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। এবং প্রতিদিন ড্রেসিং করার জন্য ও খাওয়ার ঔষধ কিনতে হবে।রোগী সুস্থ্য। এবার রিলিস দেওয়ার পালা।নার্সকে খুশি করতে হবে। দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। ওয়ার্ড বয়কে খুশি করতে হবে। সবাইকে খুশি করে লেংটা হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তারপর বাহিরে এসে দেখবেন জাতির সেই ব্যানার ঝুলে আছে,আমি ও আমরা সবাই সাধু। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন চট্টগ্রাম সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল জনগণের ফ্রি চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা কিন্তু সেখানে টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা নেয়া বড়ই বেমানান। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষের ভরসা চট্টগ্রাম সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনিয়ম অবেবস্থাপনার মধ্যে ডুবে থাকলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হবে বলে ভুক্তভোগী রোগী ও চট্টগ্রাম বিভাগের জনগণের আশঙ্কা। জনগণের দাবি সরকারের উধ্বতন মহলের তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি।